Saturday, July 12, 2025

বর্ষাবেলার বন্ধু

 এমন দিনে তারে বলা যায়

এমন ঘনঘোর বরিষায় 

 

যাই বলিস তুইমুখ ফুটে আজ না” নয় আর 

কী ঋতু পছন্দ তোমার বলো বর্ষাকাল ?

সায়নবেলায় মেঘের সাথে ঘুরতে যাওয়া 

হাঁটতে হাঁটতে পথ ফেলে যেই পিছনদিকে বাড়িয়েছি পা

ঝমঝমিয়ে মেঘেরা সব ভিজিয়ে গেল এলো চুলে 

কী নাম তোমার সেই বন্ধুর বলো কী নাম বলো

সেই মেঘেদের  সেই হাঁসেদের  সেই মেঘেদের 

বর্ষাবেলার বন্ধু তুমি সেই যে এলে অসময়ে

সেই থেকে সেই ঠায় দাঁড়িয়ে 

                             ভিজে যাচ্ছি ভিজেই যাচ্ছি

এমন দিনে শুনব বলে  সেই থেকে কান পেতেই  আছি

বলো বলো সেই থেকে সেই জেগেই আছিদু চোখ জেগে

                                    সেই যে কতক্ষণ 

অঝোর ধারায় আজ ভিজে যাইসাঁঝের প্রদীপ সঙ্গে একা

                                    মিশে যাচ্ছে প্রবল বরিষণ 

 

 

 

 

সে কথা শুনিবেনা  কেহ আর

নিভৃত নির্জন চারিধার

 

 

ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এলো ঘুমের ভেতর

                      ভোর বেলাকার স্বপ্ন জাগরণে 

তুমি তখন ছোট্ট মেয়ে সাঁতার কাটো ঝিলের জলে 

ভোরবেলাকার বৃষ্টি মানে গাছের পাতায়

                             চোখের পাতায়

উড়ে এসে জুড়ে বসলো মেঘেরা সবশব্দরা সব  লেখার খাতায়

জুঁইয়ের ডালে বৃষ্টিরা সব  তোর চোখেতেও স্বচ্ছ সবুজ ঝিল

ঝিলের জলে মেঘেরা সব মেঘনাকি কবেকার সেই হঠাৎ চেনা হাঁস

ভুলেই গেছি অ মেয়ে তুই হাঁস ছিলি কিতোর পালকেই 

বর্ষাভেজা ভোরভোরই হবে - এমন কোন কথা তো নেই 

কথা তো নেই এমন কথা ছিল না তো কোন কালেই 

অসময়ের তুমি এলে বর্ষা নিয়ে 

                      ভিজিয়ে গেলে ভোরকে,  অজান্তেই 

ভোরবেলাকার বৃষ্টি এলে  ছুঁয়ে যাচ্ছ হৃদয় 

ধুয়ে যাচ্ছ সবুজ দুব্বো ঘাস 

কী পরিচয় তার বলো ... কে ছিল সেই হাঁস 

 

 

 

সমাজ সংসার মিছে সব

মিছে এ জীবনের কলরব 

 

 

তুমি আসছো এক পাআমি আসছি এক 

ঝিলের জলে পা ডুবিয়েছ  ভালবাসবার সেই বৃষ্টি দিন 

এক এক করে ছুঁড়ে দিচ্ছ 

              ঝিলের জলে একেকটা নাম

তোমার নাম বিকেল বেলার মেঘ 

              আমার ক্ষেত্রে সেটাই নামবিহীন 

তুমি আসছো এক পাআমি আসছি এক

বৃষ্টিতে ভিজব জেনেই তোমার শাসন,

              এ মা বাড়ি যাও 

                      অথচ মেঘই তোমার বন্ধুবৃষ্টিতেই সখ্য 

তুমি যে সেই হাঁস ঝিলের ধারে তোমার সাথে দেখা 

ঝিল,  না কি হাঁস মেঘ না কি তুমি 

                      কে জানে কী বা উপলক্ষ 

সাল তারিখ মনে তো নেইমনে তো নেই,

                                 কী বারকোন অব্দ

 তুমি আসছো এক পাআমি আসছি এক

                      ঝমঝমিয়ে এসে যাচ্ছে শব্দ 

এই তো আছে,  আমার কাছে বৃষ্টি শব্দ 

                           তোর কাছে পুরো বর্ষা ভাষা 

এই তো আকাশসাজিয়ে নিবি 

নিজের মত মেঘএক চিলতে 

                      সত্যি ভালবাসা 

 

 

 

এমন দিনে মন খোলা যায় 

 

তোর কাছে হাত পেতেছি বৃষ্টি চেয়ে 

সেটাই প্রথম সেটাই বুঝি তোমার কাছে 

                               আমার চির ঋণ 

স্মৃতির থেকে উঠে আসছে 

              প্লাবন তোড়ে ভেসে আসছে 

ভেসেই আসুক,  ভালবাসবার সেই শ্রাবণ দিন 

সেই প্লাবনেই হঠাৎ দেখাপরিচয়ের দরকারই নেই 

খুলে যাচ্ছে অতীত কালের ভোর 

ঝিলের জলে তুই সে হঠাৎ হাঁস 

                      এতদিনের চেনা তবুও 

জড়িয়ে যাচ্ছে পরিচয়ের ঘোর 

সেই হাঁসটির নাম রেখেছি বর্ষাদিনের চই” 

ক্ষতি কী আর ডাকনামেতে 

              মনে মনে আমি তো সেই

                             তার বন্ধুই হই 

 

Tuesday, September 3, 2024

অভিশপ্ত কবিজন্ম

 


চুপিসারে কথা বলতে নেই, যা কথা হবে

রেখে যাব ছাতিমের ডালে, ভরা বর্ষার দিনে

সেই যে একদিন সূর্যাস্তের কিছু পরে  বাড়ি থেকে 

বেরিয়েছিলে তুমি, অন্ধকার আড়াল করে

তুমি ছুঁয়েছিলে ছাতিম গাছের ছায়ায়, একটা আকুল শরীর

এখনো পাখির ঠোঁটের কোণে শুকনো পাতার মর্মর 

হাওয়া দিয়ে যায় শিরশির, মনে করলেই পাগল 

আমি তো চেয়েছিলাম পাখি হতেই, পরজন্মে

আজ পাতায় পাতায় তাই প্রতিটি জন্মবদলের রঙ

দেখো তো চিনতে পারো কি না, ওই বৃষ্টির জলের স্পর্শ

আর কোন আগুনে পুড়িয়ে ছিলে সে মুহূর্ত … 

নিজেই জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে গেছ সেদিন, ডালপালা 

সাক্ষী ছিল, আছে, এক সুতীব্র আকর্ষণে, মেলে 

ধরেছিলেম ডানা, পুড়তেই তো চেয়েছিলাম আমি 

আমাদের যৌথ প্রেম লিখে গেছে অসমাপ্ত গান সে ডানায় 

শব্দ পুড়ে আঁকিবুঁকি 

                         নদী হয়ে মিশে গেছে কানায় কানায়




যদি ক্লান্ত হই, যদি চোখে লেগে আসে ঘুম, যদি 

কাজল ধেবড়ে যায়, তবে তুমি উড়িয়ে দিও সেসব চিঠিদের 

যদি মেঘ নেমে আসে যদি অপেক্ষায় পাথর হয়ে যায় 

সে প্রেমিক, ওই হাতে মুখ ঢেকে দিও তুমি … 

যে হাতে ছুঁয়েছ আগুন, যে হাতে নিয়েছ বিদ্যুৎ 

যে হাতে দিয়েছ পালক, পাখিদের ডানায় 

সে হাতেই নিয়ে এসো জল , কুয়াশাভেজা ভোরে  

শব্দপতনের সায়ংকালে ভীষণ প্রয়োজন তোমায় 

হে আবেগ, শূন্য ঘরে তোমার অভিসার 

মেঘপরীদের সাথে, বন্ধুতা পাতাও তুমি ফুলে ওঠা 

তীব্র জলোচ্ছ্বাস আর ঘূর্ণি ঝড়ের সাথে 

এভাবেই, ঠিক এভাবেই ঘিরে ধরে থাকো  আমায়

তোমার শরীর থেকে টুপটাপ ঝড়ে পরে শব্দেরা 

কুড়োতে পারি না আমি, ভুল হয়ে যায় নিজ চোখে দেখা 

দুর থেকে আরও দুরে চলে যেতে থাকে 

                                            একগুচ্ছ লেখা   


 

মাথার ভেতর রোজ নিয়ে বাঁচি অবাধ্য এক লেখা 

বৃষ্টি এলে টের পাই, সে লেখা উত্যক্ত করে নিরুপায় 

একটা দুটো পঙক্তি এসে বসে গাছের ডালে, তবু 

অসময়ের ডাকে বাইরে যেতে নেই , কী কুক্ষণেই না 

ধরেছিলাম হাত, চুম্বনের আকর্ষণে, মৃত্যুকেও তাচ্ছিল্য 

করেছি আমি, একটা ধানের খেতের পাড়ে শীতের 

সকালে সেই যে ছোট্ট ফড়িং মেয়েকী কুক্ষণেই না 

দেখেছিলেম তার সর্বাঙ্গে বাংলাভাষার ওম 

যাকে তুমি প্রেম বলো আমি বলি অভিশাপ … 

আমি তাকে ভাসিয়ে দিই লেখার খাতায় 

কেউ কেউ ভেসে ওঠে, কেউ কেউ ডুবে যায় অতলে 

শরীর থেকে শরীরে, পাতা থেকে পাতায়

গাছ থেকে গাছে, সারি সারি ঠায় দাঁড়িয়ে 

আমাদের  গাছজন্ম , আমাদের খড় কুটো শূন্যতা 

নদী হয়ে পড়ে থাকে শাদা পাতায় 

অভিশপ্ত কবিজন্ম বয়ে নিয়ে যাই দুর থেকে দুরে 

আমি আর তুমি, কতটা পালাতে পারি দুই ভবঘুরে